ঝড়, বন্যা, দাবানল, তুষারপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে গত বছর মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিভিন্ন দেশ। মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গের তথ্যমতে, ক্ষতির পরিমাণ আড়াইশ বিলিয়ন ডলারের বেশি। বিভিন্ন দুর্যোগে মারা গেছে ২০ হাজারের বেশি মানুষ। এছাড়া তীব্র তুষারপাতে নাকাল যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার কয়েক কোটি মানুষ।
বন্যা ও ভূমিধস
২০২২ সাল শুরু হয় আফ্রিকায় বন্যায় প্রাণ ২ হাজার মানুষের মৃত্যুর ঘটনা দিয়ে। জানুয়ারির ওই বন্যায় সবচেয়ে বেশি ৬১০ জন মারা যায় নাইজেরিয়ায়। ভারী বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত হয়- বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা। মারা যায় সাড়ে ৩ হাজারের বেশি।
দাবদাহ ও দাবানল
জুন থেকে আগস্ট- ৩ মাসে কয়েক দফা দাবদাহের সাক্ষী হয় যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি। গড় তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মারা যায় ১৬ হাজার মানুষ। খরার কবলেও পড়ে মহাদেশটি। দাবদাহের কবলে পড়ে ভারত, পাকিস্তান, চীন ও জাপান। এছাড়া, দাবানলের ভয়াবহতার সাক্ষী হয় স্পেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া, ওয়াশিংটন, টেক্সাস।
অগ্ন্যুৎপাত ও ভূমিকম্প
জানুয়ারিতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ টোঙ্গার উপকূলে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ও ভূমিকম্প হয়। ৪০ বছর পর নভেম্বরে জেগে উঠে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্নেয়গিরি মাওনা লোয়া। অগ্ন্যুৎপাত ঘটে জাপানের সাকুরাজিমা আগ্নেয়গিরিতেও। সবশেষ ডিসেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট সেমেরু আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত হয়। এদিকে, এবছর তিন দফা ভূমিকম্পে আফগানিস্তানে মারা গেছে ১২শ মানুষ। নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার জাভায় ভূমিকম্পে প্রায় হারায় ৬শ জন।
হারিকেন
সেপ্টেম্বরে হারিকেন ইয়ানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয় যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা, মারা যায় দেড় শতাধিক। নভেম্বরে সেখানে আঘাত হানে হারিকেন নিকোলা। মধ্য আমেরিকায় তাণ্ডব চালায় হারিকেন জুলিয়া। সেপ্টেম্বরে কানাডায় হারিকেন ফিওনা আর অক্টোবরে মেক্সিকোতে আছড়ে পড়ে হারিকেন রোসলিন।
তুষারপাত
বছর শেষে তুষারপাতে নাকাল হয় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার অন্তত ২৫ কোটি মানুষ। বোম্ব সাইক্লোনের কারণে দেশদুটিতে অনেকে হতাহত হয়। এর আগে, তুষারপাতের কবলে পড়ে পুরো ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য।
বিশ্বজুড়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির শঙ্কা তাদের।