মুক্ত জানালা ডেস্ক
হলিউড সিনেমা লাইফ অব পাই এর কথা মনে আছে? সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া এক নাবিক কীভাবে প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে নিজের জীবন টিকিয়ে রেখে ছিলেন। বাস্তবেও এমন রোমাঞ্চকর ঘটনা কারো সাথে ঘটতে পারে তা বিশ্বাস করা দায়। আর বাস্তবে সেটি ঘটলো অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বাসিন্দা ৫১ বছর বয়সী নাবিক টিম শ্যাডকের সঙ্গে। মজার বিষয় হলো সিনেমার মতো নাবিক শ্যাডকের সঙ্গে ছিল তার কুকুরটিও।
প্রশান্ত মহাসাগরে আটকা পড়া নাবিক টিম শ্যাডক ২ মাস পর সুস্থভাবে বেঁচে ফিরেছেন। সঙ্গে থাকা তার পোষা কুকুরটিকেও সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। সমুদ্রে শ্যাডকে বেঁচে থাকার একমাত্র ভরসা ছিল কাঁচা মাছ ও বৃষ্টির পানি। এ যেন হলিউডের সিনেমা ‘লাইফ অব পাই’ বাস্তবে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বাসিন্দা ৫১ বছর বয়সী নাবিক টিম শ্যাডক। তার কুকুরের নাম বেলা। গত এপ্রিলে পোষা কুকুরকে সঙ্গে নিয়ে মেক্সিকো ছেড়ে ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন শ্যাডক। কিন্তু যাত্রা করার কয়েক সপ্তাহ পরই ঝড়ের কবলে তাদের নৌকাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর গভীর প্রশান্ত মহাসাগরে আটকা পড়েন ওই নাবিক ও তার কুকুর।
নাবিক টিম শ্যাডক ও কুকুর বেলা প্রতিকূল উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে দুই মাস ধরে ভাসতে থাকেন। অবশেষে মেক্সিকো উপকূল থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
দুই মাস ধরে নিখোঁজ থাকার পর চলতি সপ্তাহে একটি হেলিকপ্টার শ্যাডক ও বেলাকে দেখতে পায়। পরে একটি মাছ ধরা ট্রলারে করে তাদের উদ্ধার করা হয়।
ট্রলারটিতে থাকা এক ডাক্তার অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যম নাইন নিউজকে বলেন, উদ্ধারকৃত ওই ব্যক্তি স্বাভাবিক ও সুস্থ রয়েছেন।
শ্যাডক জানান, তার নৌকায় থাকা মাছ ধরার সরঞ্জাম বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছে। এ ছাড়া নৌকায় ছাউনি থাকায় রোদে পোড়া থেকেও বেঁচে যান শ্যাডোক।
উদ্ধারের পর প্রকাশ হওয়া ভিডিওতে ছবিতে শ্যাডককে বেশ হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়। তবে অনেকটা শুকনা ও মুখে বেশ বড় দাড়ি দেখা যায় তার। অল্প পরিমাণ খাবারও খেতে পারছেন তিনি।
নাইন নিউজকে শ্যাডক বলেন, ‘সমুদ্রে আটকে থাকা দিনগুলো আমার কাছে ভয়াবহ ছিল। বেঁচে থাকার লড়াই করতে হয়েছে একা। এখন শুধু আমার একটু বিশ্রাম ও ভালো খাবার খাওয়া দরকার। এমনিতে আমি খুব ভালো আছি।’
ওই নাবিককে উদ্ধার করা টুনা ধরার ট্রলারটি এখন মেক্সিকোতে ফিরে যাচ্ছে। সেখানে টিম শ্যাডকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা ও প্রয়োজন হলে চিকিৎসা দেওয়া হবে।