২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে আলোচিত মৃত্যুর ঘটনা ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রয়াণ। ৭০ বছরের রাজত্বের অবসান ঘটিয়ে সেপ্টেম্বরে চিরবিদায় নেন ৯৬ বছর বয়সী আলেকজান্ড্রা ম্যারি। উত্তরাধিকার সূত্রে ব্রিটেনের রাজা হন তাঁর ছেলে সাবেক প্রিন্স চার্লস ফিলিপ আর্থার জর্জ।
গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদ। সেখান থেকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাংকেতিক বার্তা গেল, লন্ডন ব্রিজ ইজ ডাউন।
এর সাথেই সমাপ্তি হল ব্রিটেনের ইতিহাসে দীর্ঘ ৭০ বছরের রাজত্বের একটি অধ্যায়ের। ৯৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
পুরো নাম এলিজাবেথ আলেকজান্ড্রা ম্যারি। বাবার মৃত্যুর পর ১৯৫৩ সালে মাত্র ২৫ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন তিনি। ব্রিটিশ রাজপরিবার বা সিংহাসনকে বলা হয় ইনস্টিটিউশন। তাকে টিকিয়ে রাখতে বহু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন এলিজাবেথ। তার রাজত্বকালে ও জীবদ্দশায় ১৩ জন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, ১৩ জন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ দেখেছে বিশ্ব।
১৯৬০ সালেই ঠিক করে রাখা হয়েছিল রানির মৃত্যু পরবর্তী কর্মকাণ্ড। যা অপারেশন লন্ডন ব্রিজ নামে পরিচিত। তবে রানি স্কটল্যান্ডে মারা যাওয়ায় অপারেশন লন্ডন ব্রিজের আগে অনুসরণ করা হয় অপারেশন ইউনিকর্ন।
প্রটোকল অনুযায়ী ১০ দিনের কর্মসূচির শুরুতে বালমোরাল থেকে হলিরুডহাউস প্রাসাদে নিয়ে যাওয়া হয় রানির কফিন। সেখানে সেন্ট জাইলস ক্যাথেড্রালে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেসে নেয়া হয় রানিকে।
পুরো রাস্তা জুড়ে শোক ও শ্রদ্ধা জানায় হাজারো সাধারণ মানুষ। ওয়েস্টমিনস্টার হলে ৪ দিন রানিকে শেষ শ্রদ্ধা জানান সর্বস্তরের মানুষ।
মহাপ্রয়াণের ১০ দিন পর, রানির জন্য উইন্ডসর ক্যাসেলে শেষবারের মতো সবাই গেয়ে ওঠেন ব্রিটেনের জাতীয় সঙ্গীত, গড সেইভ দ্য কিং।
সেন্ট জর্জ সিক্সথ মেমোরিয়াল চ্যাপেলের রাজকীয় ভল্টে রানিকে নামানোর সময় ব্যাগপাইপে সুর তুলে শেষ বিদায় জানানো হয় রাজপ্রাসাদের আদরের লিলিবেটকে।
রানির মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সূত্রে ব্রিটেনের রাজা হন তাঁর ছেলে সাবেক প্রিন্স চার্লস ফিলিপ আর্থার জর্জ। প্রথা অনুযায়ী কুইন কনসর্ট হয়েছেন তাঁর স্ত্রী ক্যামিলা। আগামী মে মাসে অনুষ্ঠিত হবে নতুন রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক।