বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী আবির। পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করে অনেক কষ্টে টাকা জমিয়েছেন একটি স্মার্টফোন কিনবেন বলে। এরপর একদিন রাজধানী একটি নামিদামি মার্কেটে গেলেন স্মার্টফোন কিনতে। আবির দেখলেন, কোম্পানির আউটলেটের চাইতে কয়েকটি দোকানে তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে মোবাইল। লাভের আশায় আবির কম দামে দোকান থেকেই স্মার্টফোন কিনে মনের আনন্দে বাসায় ফিরলেন।

বিপত্তিটা দেখা দিল কয়েকদিন পর। দেখা গেল আবিরের মোবাইলের নেটওয়ার্ক ঠিক মতো কাজ করছে না। আপসগুলো নিয়মিত আপডেট হচ্ছে না। এরকম আরও অনেক বিড়ম্বনা দেখা দিল।

আবিরের মতো এ ধরনের বিড়ম্বনায় আমাদের মাঝে অনেকেই পড়েন। না জেনে-বুঝে, ভালোভাবে যাচাই-বাছাই না করে স্মার্টফোন কেনার কারণে এমনটা হয়ে থাকে।

সাধারণত আসল স্মার্টফোনগুলো সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে কাসটস দিয়ে দেশের বাজারে ঢুকে। সরকারি ডাটাবেসে এই মোবাইলগুলোর IMEI (International Mobile Equipment Identity) নাম্বার নিবন্ধিত হয়ে যায়। দেশে তৈরি মোবাইলগুলোর IMEI নাম্বারও সরকারি ডাটাবেসে থাকে। এই মোবাইলগুলোর দাম তুলনামূলক বেশি থাকে।

অন্যদিকে, ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া চোরাই পথে আনা ফোনগুলোর দাম কিছুটা কম। এগুলো দেখতে অবিকল অফিসিয়াল মোবাইল ফোনের মতো। ব্যবহারের শুরুর দিকে মোবাইলগুলো অবিকল অরজিনাল মোবাইলের মতোই কাজ করে। কিন্তু কিছুদিন ব্যবহারের পর নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

যেভাবে যাচাই করবেন অফিসিয়াল মোবাইল

বিটিআরসি IMEI নাম্বারের মাধ্যমে যাচাই

অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে

প্রতিটি অফিসিয়াল স্মার্টফোনে ১৫-সংখ্যার একটি IMEI নাম্বার থাকে। এটি প্রতিটি ফোনের জন্যই আলাদা হয়, যা ডিভাইসের প্যাকেজিংয়েও উল্লেখ থাকে। একটি আনঅফিসিয়াল ফোন থেকে একটি অফিসিয়াল ফোন চেনার জন্য এই কোডটিই যথেষ্ট।

অর্থাৎ প্রকৃত ফোন যাচাই করতে সর্বপ্রথম এই ১৫-সংখ্যার IMEI code খুঁজে বের করতে হবে। এই অনুসন্ধানটি দুটি উপায়ে চালানো যেতে পারে :

প্রথমটি হলো→ *#০৬# ডায়াল করলে সাথে সাথেই ১৫-সংখ্যার IMEI নাম্বারটি মোবাইল স্ক্রিনে ভেসে উঠবে।
আরেকটি অনুসন্ধান পদ্ধতি হলো ফোনের Settings-এর মাধ্যমে। Settings থেকে খুঁজে বের করতে হবে About Device অ্যাবাউট ডিভাইস। এখানে ক্লিক করলে দ্বিতীয় স্ক্রিন থেকে বাছাই করতে হবে Status. অতঃপর মোবাইল স্ক্রিনে কাঙ্ক্ষিত IMEI নাম্বারটি দেখতে পাবেন।

এবার কম্পিউটার বা মোবাইল থেকে যেকোন ব্রাউজার (যেমন- গুগল ক্রোম) থেকে imei.info ওয়েবসাইটে যেতে হবে। এরপর দৃশ্যমান ডায়ালগ বক্সে সেই ১৫-সংখ্যার IMEI নাম্বারটি লিখে চেক-এ ক্লিক করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গেই ফোনের সমস্ত তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রদর্শিত হবে। এই অংশে যদি ফোনের স্ক্রিনে ফোনের তথ্য না দেখিয়ে ভিন্ন কিছু দেখায়, তাহলে বুঝতে হবে এটি একটি নকল ফোন।

আইফোনের ক্ষেত্রে

প্রথমে সিম কার্ড স্লটে ফোনের Serial Number পরীক্ষা করতে হবে। অথবা Settings থেকে General তারপর About গিয়ে পাওয়া যাবে Serial Number.

এবার মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে checkcoverage.apple.com ওয়েবসাইটে যেতে হবে। তারপর সেখানে দেখানো ডায়লগ বক্সে সিরিয়াল নাম্বারটি লিখে চেক-এ ক্লিক করতে হবে।

এই অংশে হ্যান্ডসেট নকল হলে স্ক্রিনে ‘অবৈধ সিরিয়াল নম্বর’ বার্তা প্রদর্শন করবে। আর যদি তা না করে তাহলে বুঝতে হবে মোবাইল ফোনটি আসল।

এসএমএস-এর মাধ্যমে অফিসিয়াল ফোন যাচাই
মোবাইলের Messages অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে KYD, তারপর একটি স্পেস; অতঃপর ১৫-সংখ্যার IMEI Number. অর্থাৎ ম্যাসেজটি এরকম হবে- “KYD 1234567890ABCDE”।

তারপর ম্যাসেজটি পাঠিয়ে দিতে হবে ১৬০০২ নাম্বারে। এর সঙ্গে সঙ্গেই একটি উত্তর আসবে আর এই উত্তরটিই নিশ্চিত করবে যে মোবাইল ফোনটি অফিসিয়াল নাকি আনঅফিসিয়াল।

Muktojanala

সমসাময়িক সকল বিষয়ের মুক্ত তথ্যের অনলাইন প্লাটফর্ম।

https://www.muktojanala.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *