মুক্ত জানালা ডেস্ক
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে যেন রহস্যের শেষ নেই। কারো চোখে তিনি খলনায়ক, কারো চোখে আবার মহানায়ক। ব্যক্তিগত জীবনে পুতিন অনেক কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে চলেন। তাইতো তার জীবন সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়।
সম্প্রতি রুশ ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনারের ব্যর্থ বিদ্রোহের পর পুতিনের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অনেকেরই এখন আগ্রহ তুঙ্গে।
এরই মধ্যে পুতিনের ট্রেনের একটি ছবি প্রকাশ করেছে রাশিয়াবিষয়ক ব্রিটিশ তদন্ত সংস্থা ডসিয়ার সেন্টার। এ তদন্তে পুতিনের ট্রেন রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থা জিরকন সার্ভিসের সাবেক কর্মকর্তা ও প্রায় সাড়ে ২৫ হাজার অভ্যন্তরীণ নথির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ডসিয়ার সেন্টারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ক্রেমলিনের প্রাসাদ থেকে দেশের মধ্যে দূরবর্তী কোনো জায়গায় পৌঁছতে এই ট্রেনেই যাতায়াত করেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।
লন্ডনভিত্তিক সংস্থাটির খবরে বলা হয়, পুতিনের ট্রেনের মধ্যে রয়েছে কসমেটোলজি সেন্টার, জিম ও স্পা।
পুতিনের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবে ট্রেনটির মধ্যে রাখা হয়েছে তুরস্ক ঝরনা ও সুগন্ধি ফোম। ট্রেনের মধ্যে থাকা ওই ঝরনাটির দাম সাড়ে ৩৭ লাখ পাউন্ড (প্রায় ৫০ কোটি টাকা) বলে জানা গেছে।
সাঁজোয়া বিলাসবহুল ট্রেনটির নির্মাতারা প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্যের কথাও চিন্তা-ভাবনা করেছেন। এর জন্য সেখানে ‘অ্যান্টি-এজিং মেশিন’, ফুসফুসের ভেন্টিলেটর ও অন্যান্য মনিটরিং মেশিন রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে ট্রেনটির মধ্যে ছোটখাটো হাসপাতাল চালানো যাবে বলেও দাবি করেছে ওই তদন্তমূলক ওয়েবসাইট।
বর্তমানে সাঁজোয়া ওই ট্রেনটিকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু করেছে রুশ প্রশাসন। এর জন্য ৬ কোটি পাউন্ড খরচ করতে চলেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।
এ সংক্রান্ত ছাড়পত্রও দিয়েছেন তিনি। এর জন্য ট্রেনটিকে কোনও গোপন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রেনটির মধ্যে রাখা হচ্ছে একটি সিনেমা হল। এছাড়াও প্রেসিডেন্টের কামরায় নতুন করে লাগানো হচ্ছে একটি বিশাল প্যানাসনিক টিভি, ডিভিডি ও ভিএইচএস প্লেয়ার।
বুলেট প্রুফ ট্রেনটিতে এক-৪৭ বা স্নাইপার রাইফেলের গুলিও ভেদ করে ভেতরে থাকা যাত্রীর কোনও ক্ষতি করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রেসিডেন্ট পুতিন যখন ওই ট্রেনে থাকেন, তখন তাকে বিশেষ যাত্রী বা স্পেশাল প্যাসেঞ্জার বলা হয় বলে জানিয়েছেন ক্রেমলিনের কর্মকর্তারা।
এ নিয়ে ডসিয়ার সেন্টারের হয়ে কাজ করা সাংবাদিক ইলিয়া রোজডেভেনস্কি সিএনএনকে বলেন, এই ট্রেন ব্যবহার করার মানসিক কারণ হলো পুতিন ভয়ে আছেন।