
ন্যাটোর সাথে রাশিয়ার বিরোধ উত্তর আমেরিকান দেশগুলোর এ সামরিক জোটের জন্মলগ্ন থেকেই। নানা সময়েই চড়েছে দুই পক্ষের উত্তেজনার পারদ। সেই আগুনে ঘি ঢালার কাজ করছে ইউক্রেন যুদ্ধ। অনেক বিশ্লেষকের মতে, ইউক্রেনকে পাশ কাটিয়ে চলমান সংঘাত ধীরে ধীরে রূপ নিচ্ছে রাশিয়া-ন্যাটো যুদ্ধে।
২০২২ সালে বিশ্ব রাজনীতির সবচেয়ে বড় এবং আলোচিত ঘটনা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া এ সংঘাতের ফলে বিশ্বজুড়েই রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিকসহ বিভিন্ন খাতে দেখা দিয়েছে চরম অস্থিরতা। ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পক্ষের মদদ এ যুদ্ধকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে।
১৯৪৯ সালের ৪ এপ্রিল নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে ন্যাটো। চুক্তির পঞ্চম ধারা অনুযায়ী, এক বা একাধিক সদস্য দেশের ওপর সশস্ত্র হামলা জোটের সবার ওপর হামলা হিসেবে গণ্য হবে। বর্তমানে জোটের সদস্য সংখ্যা ৩০টি।
ন্যাটোর জন্মলগ্ন থেকেই এর অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর সাথে রাশিয়ার বিরোধ। নানা সময়েই দুই পক্ষের উত্তেজনার পারদ ওঠানামা করেছে। এবছরের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া ইউক্রেন যুদ্ধ সেই উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর সম্প্রসারণের পদক্ষেপকে নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখছে রাশিয়া। ইউক্রেন যাতে ন্যাটোতে যোগ না দেয় সেই নিশ্চয়তা চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর দেশটিতে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে মস্কো।
এরপর উত্তেজনা বাড়িয়েছে ন্যাটোর সদস্য হতে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের আনুষ্ঠানিক আবেদন। রাশিয়ার সাথে দীর্ঘদিন ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখলেও, ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর অবস্থান পাল্টায় দেশ দু’টি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন ইস্যুতে সরাসরি যুদ্ধে না জড়ালেও, মূলত রাশিয়ার সংঘাত চলছে ন্যাটোর সাথেই। জোটের নিয়ম অনুযায়ী সদস্য দেশের বাইরে কারো ভূখণ্ডে হামলার এখতিয়ার না থাকলেও, কিয়েভকে সামরিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ন্যাটো। পরিস্থিতি এতোটাই ঘোলাটে যে, খোদ ন্যাটো মহাসচিবই ইউক্রেন যুদ্ধ, ন্যাটো-রাশিয়ার যুদ্ধে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।