
মুক্ত জানালা ডেস্ক
চ্যাটজিপিটি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই অ্যাপলিকেশনটি আপনার যেকোনো প্রশ্নের উত্তর হাজির করতে পারে। সবচেয়ে অভিনব হলো, প্রচলিত কম্পিউটার সফটওয়্যার বা অ্যাপলিকেশনের বাইরে গিয়ে সেখানে সে নিজের মতো বুদ্ধিমত্তা বা মানবিকতার ছোঁয়াও দিতে পারে। গত বছরের নভেম্বরে তৈরি হওয়ার পর সারা বিশ্বেই এখন চ্যাটজিপিটি নিয়ে একটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওপেন এআই তাদের চ্যাটবট চ্যাটজিপিটির যে সবশেষ আপডেট নিয়ে এসেছে, সেখানে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে অনলাইনে নানা ধরনের তথ্যের অনুসন্ধান করা যাবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে এটি খুব বড় ধরনের একটি অর্জন। এর ফলে চ্যাটজিপিটি এখন সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ থেকে শুরু করে সেগুলোর অগ্রগতি এবং হালনাগাদ তথ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ের সবশেষ তথ্য সরবরাহ করতে পারবে।
এর আগে চ্যাটজিপিটি শুধু প্রশিক্ষিত তথ্যের ভিত্তিতে উত্তর দিতে পারতো। এ সংস্করণটি অসাধারণ ভাষা দক্ষতা দেখালেও আপডেট তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে বেশ ঝক্কি পোহাতো।

এখন থেকে চ্যাটজিপিটি অ্যাপে প্লাস সাবস্ক্রাইবাররা ‘ব্রাউজিং’ নামের নতুন ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন। নতুন এই ফিচারের মাধ্যমে চ্যাটজিপিটি ইন্টারনেট ব্যবহার করে উত্তর দিতে পারবে। তবে চ্যাটবটটি শুধু মাইক্রোসফটের নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিন বিং-এর মাধ্যমে উত্তর খুঁজবে।
প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট টেকক্রাঞ্চের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন এই সুবিধাটি চালু করতে হলে অ্যাপের সেটিংসের ‘নিউ ফিচারস’ বিভাগে গিয়ে জিপিটি-৪ নির্বাচন করতে হবে।
এরপর, ড্রপ-ডাউন তালিকা থেকে ‘ব্রাউজ উইদ বিং’ নির্বাচন করে ব্রাউজিংয়ের সুবিধাটি চালু করা যাবে। নতুন এই সুবিধা আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড উভয় অপারেটিং সিস্টেমের চ্যাটজিপিটি অ্যাপে পাওয়া যাবে।
চ্যাটজিপিটি মূলত একটি লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল। এটি যে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম। তবে ব্রাউজিংয়ের সুবিধাটি চালু না করে চ্যাটজিপিটিকে ২০২১ সালের পরে ঘটে যাওয়া কিছু সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে এটি আর উত্তর দিতে পারবে না।
ব্রাউজিংয়ের সুবিধাটির মাধ্যমে চ্যাটজিপিটি মূলত ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাবে। ফলে চ্যাটবটটি সর্বশেষ তথ্য নিজেই খুঁজে পেতে পারবে।
ব্রাউজিংয়ের সুবিধা যুক্ত হওয়ায় চ্যাটজিপিটির ক্ষমতা আরও বাড়লেও শুধু বিং-এর মাধ্যমে সার্চের সুবিধাকে সীমাবদ্ধতা বলা যায়। কারণ বিং– এর চেয়ে ভালো সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে।

চ্যাটজিপিটির বিং-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ হওয়ার কারণ— মাইক্রোসফটের সঙ্গে ওপেনএআইয়ের অংশীদারিত্ব। মাইক্রোসফট ওপেনএআইতে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছে, এবং প্রতিষ্ঠানটি বিংকে কাজে লাগাতে চায়। তবে ব্যবহারকারীদের জন্য এটি খুব একটা ভালো সিদ্ধান্ত নয়।
চ্যাটজিপিটির পুরো নাম চ্যাট জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইনড ট্রান্সফর্মার। এটি হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এমন একটি অ্যাপলিকেশন যাকে বলা হয় ‘লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল টুলস’। এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটি চ্যাটবট সিস্টেম বা আলাপচারিতা করার অ্যাপলিকেশন।
এটি তার তথ্যভাণ্ডারে থাকা নানা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে লিখিত প্রশ্নের জবাব হাজির করে। যে ফরম্যাটে বা যেভাবে চাওয়া হয়, অনেকটা সেভাবেই সে এসব উত্তর দেয়। তবে লাইভ বা সরাসরি ইন্টারনেটে কাজ করতো না। এখন থেকে লাইভ বা সরাসরি ইন্টারনেটে কাজ করবে এবং এটি ইন্টারনেট ঘেঁটে প্রশ্নের উত্তর দিবে।